দামী ফোন হাতিয়ে নিয়েও ব‍্যবহার করতে না পেরে ফোনের মালিককে ফিরিয়ে দিল যুবক

6th September 2020 9:19 pm বর্ধমান
দামী ফোন হাতিয়ে নিয়েও ব‍্যবহার করতে না পেরে ফোনের মালিককে ফিরিয়ে দিল যুবক


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( জামালপুর ) : কথায় আছে চুরি বিদ্যা মহা বিদ্যা ,যদি না পড়ো ধরা ।এই আপ্তবাক কতটা যে সত্যি তা আরও একবার প্রমান করে দিল পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের অজ পাড়াগাঁয়ের যুবক আলমগির । যা নিয়ে এখন তুমুল চর্চা চলছে জামালপুরে । জামালপুর থানার জ্যোৎশ্রীরাম পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত গ্রাম শাহহুসেনপুর দেওয়ানপাড়া । এই গ্রামটিকে একেবারে অজ পাড়াগাঁ বললেও অত্যুক্তি হবে না । এই গ্রামেরই এক যুবক আলমগির গত শুক্রবার সকালে জামালপুরের শুভাশিস ভট্টাচার্য নামে এক ব্যক্তির বহু দামি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোনটি  হাতিয়ে নেয়  । কিন্তু বিদ্যেবুদ্ধি কম থাকায় সেই ফোনটি কিভাবে  ব্যবহার করতে হবে তা তিনি কোনভাবেই বুঝে উঠতে  পরেনি। এরফলে  যুবক মহাফাঁপরে পড়ে যান। তিনি কোনোক্রম ওই ফোনটি বন্ধ করে দিয়ে চুরির দায় থেকে বাঁচার পথ খুঁজতে শুরু করেন । তারই মধ্যে খোয়া যাওয়া ফোন ফিরে পেতে  জামালপুর থানার পুলিশের দ্বারস্থ হন ফোন মালিক শুভাশিস ভট্টাচার্য । অভিযোগ পাবার পর পুলিশ তদন্তে নামে । এরপরেই বেগতিক বুঝে দু’দিনের মাথায় শনিবার সন্ধ্যায় যুবক নিজেই ধরা দিলেন ফোন মালিকের কাছে। ফোনটি নিতে আসার কথাও যুবক শুভাশিস বাবুকে জানায় ।  এরপর ওইদিন রাতে সিভিক ভলেন্টিয়ারের উপস্থিতিতে যুবক ৪৬ হাজার টাকা দামি ফোনটি শুভাশিসবাবুর হাতে তুলে দেয় । যুবক যদিও নিজের নাম জানাতে চায় না । তবে  স্থানীয়রা জানিয়েছে ওই যুবকের নাম  আলমগির । শুভবুদ্ধি জাগ্রত হওয়ার জন্য শুভাশিস বাবু মস্ত এক প্যাকেট মিস্টি ওই যুবকের হাতে তুলে দিয়ে তাঁকে সততার পথে চলার উপদেশ দিয়ে এসেছেন । বিনা পুলিশি ঝঞ্ঝাট ছাড়া ফোন হাতিয়ে  নেওয়ার দায় থেকে মুক্তি মেলায় যুবক আলমগির ফোনটির মালিকেও কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেনি । শুভাশিস ভট্টাচার্য জানিয়েছেন , গত শুক্রবার বেলা সাড়ে ৯টা নাগাদ তিনি জামালপুর থানা মোড়ের একটি মিষ্টির দোকানে মিষ্টি কিনতে যান। মিস্টি কিনে টাকা দেবার সময়ে তিনি বুক পকেটে রাখা ফোনটি বেরকরে মিস্টির দোকানের শোকেসের উপরে রাখেন ।  টাকা মেটানোর পরে ফোনটি আর না নিয়ে ভুলকরে তিনি চলে আসেন ।শুভাশিস জানান ,খানিক বাদ ফোনের কথা মনে পড়তেই তিনি ওই মিস্টির দোকানে ফের যান । কিন্তু তিনি তাঁর  ৪৬ হাজার টাকা মূল্যের অ্যাপল কোম্পানির ফোন আর সেখানে পান না । অনেক খোঁজা খুঁজির পর ফোন না পেয়ে ওই দিনই তিনি  জামালপুর থানায় লিখিত ভাবে সবিস্তার জামান । অভিযোগ পবার পর পুলিশও তদন্থে নামে । মিস্টির দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেও কাউকে  সনাক্ত করতে পারা যাইনা । অন্যের ফোন থেকে শুভাশিস বাবু নিজের ওই ফোন নম্বারে ফোন করেন কিন্তু ফোন সুইচ অফ হয়ে থাকে । শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ  ফোনটি ফের অন হয় ।তখন শুভাশিস বাবু অন্য ফোন নম্বার থেকে নিজের ওই ফোনের নম্বারে ফের ফোন করেন । তখন ওই যুবক জানায় ফোনটি তার কাছে আছে । ওই ফোনটি ব্যবহারের  কায়দা কানুন সে কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না । ফোনের মালিকের সঙ্গে কথা  বলার পর যুবক  ফোনটি ফেরৎ দিতে রাজি হয় । ফেনের মালিক শুভাশিস বাবু এই কথা থানায় গিয়ে জানান। রাত ১০ টা নাগাদ সিভিক ভলেন্টিয়ার কবির মল্লিকের  সঙ্গে শুভাশিস বাবু ও তাঁর দাদা দেবাশিস বাবু শাহহুসেনপুর দেওয়ানপাড়া নিবাসী  যুবক  আলমগিরের বাড়িতে পৌছান । যুবক ফোনটি তুলে দেন শুভাশিস বাবুর হাতে । শুভাশিস বাবু বলেন ,হাতিয়ে নেওয়া ফোন ফিরিয়ে দেবার শুভবুদ্ধি জাগ্রত হওয়ার জন্য তিনি যুবকের হাতে মস্ত একটা মিস্টির প্যাকেট তুলে দিয়ে তাঁকে সততার পথে চলার উপদেশ দিয়ে এসেছেন । রবিবার শুভাশিস বাবু বলেন, বিদ্যেবুদ্ধি না থাকায়  অনেক ঘাঁটাঘুটি করেও যুবক হাতিয়ে নেওয়া  তাঁর ফোনটি চালু করতে পারেনি ।তাঁর  দামি ফোন থেকে সিমকার্ড খুলেনিয়ে অন্য যুবক অন্য ফোনে সিমকার্ডটি   লাগায় । এইসব করতে গিয়ে তাঁর দামি ফোনটি যুবক  লক করে ফেলেছে । সেই জন্য ফোন পেয়েও তিনি ফোনটি ব্যবহার করতে পারছেন না । 

 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।